IRONGATE
পশ্চিম ফুলমতি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে একটানা উন্নয়ন, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতার পেছনে যে শক্তি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছে, সেটি হলো বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ বা ম্যানেজিং কমিটি। এ পর্ষদই মূলত বিদ্যালয়ের অভিভাবক, শিক্ষক, দাতা সদস্য এবং স্থানীয় সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী প্রশাসনিক কাঠামো।
✨ পরিচালনা পর্ষদের গুরুত্ব
বিদ্যালয়ের সাফল্যের ভিত্তি কেবল শিক্ষকের পাঠদান বা শিক্ষার্থীর অধ্যয়ন নয়, বরং একটি দক্ষ ও দূরদর্শী পরিচালনা পর্ষদ। তারা শিক্ষা নীতি, অবকাঠামোগত পরিকল্পনা, বাজেট, শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীর কল্যাণ পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখেন। পরিচালনা পর্ষদের উপস্থিতি বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও মানসম্মত শিক্ষার গ্যারান্টি হিসেবে কাজ করে।
👥 পরিচালনা পর্ষদের গঠন
পর্ষদ সাধারণত নিচের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হয়—
- সভাপতি – যিনি সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন এবং বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের দিকনির্দেশনা দেন।
- সদস্য-সচিব (প্রধান শিক্ষক) – বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বাস্তবায়নে মূল দায়িত্ব পালন করেন।
- শিক্ষক প্রতিনিধি – শিক্ষক মহলের মতামত ও প্রয়োজনীয়তা পর্ষদে তুলে ধরেন।
- অভিভাবক প্রতিনিধি – অভিভাবকদের স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের সমস্যা উপস্থাপন করেন।
- দাতা সদস্য – অর্থ ও সম্পদ দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে সহায়তা করেন।
- স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি – ইউনিয়ন পরিষদ/ওয়ার্ডের পক্ষ থেকে শিক্ষা উন্নয়ন ও সামাজিক সহযোগিতা নিশ্চিত করেন।
- সমাজের বিশিষ্টজন – শিক্ষা ও উন্নয়নে অভিজ্ঞতা ও মতামত প্রদান করেন।
📌 পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব ও কার্যাবলি
পরিচালনা পর্ষদ বিদ্যালয়ের প্রতিটি দিককে তত্ত্বাবধান ও পরিচালনার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে থাকেন। তাদের প্রধান দায়িত্বগুলো হলো—
- শিক্ষা কার্যক্রমের মানোন্নয়ন
- জাতীয় শিক্ষাক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন।
- সৃজনশীল শিক্ষা ও প্রযুক্তি নির্ভর পাঠদানের সুযোগ সৃষ্টি।
- মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সহায়তা ও বৃত্তি প্রদান।
- অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও স্বচ্ছতা
- বিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট প্রণয়ন।
- অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং তহবিলের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।
- উন্নয়নমূলক প্রকল্পে অর্থায়ন ও বহুমুখী উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ।
- শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ
- নতুন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান।
- শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা আয়োজন।
- শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
- শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা
- শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত।
- যেকোনো অনিয়ম প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।
- বিদ্যালয়কে নিরাপদ শিক্ষাঙ্গন হিসেবে গড়ে তোলা।
- অবকাঠামোগত উন্নয়ন
- নতুন ভবন, শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাব নির্মাণ।
- লাইব্রেরি, কম্পিউটার ল্যাব ও বিজ্ঞানাগার আধুনিকীকরণ।
- খেলার মাঠ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জায়গা সম্প্রসারণ।
- সমাজের সাথে সম্পর্ক রক্ষা
- অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণের সাথে নিয়মিত বৈঠক।
- বিদ্যালয়ের কার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত।
- সমাজসেবা ও মানবিক কর্মকাণ্ডে বিদ্যালয়কে সম্পৃক্ত করা।
🌟 পরিচালনা পর্ষদের ভিশন
পর্ষদের লক্ষ্য হলো বিদ্যালয়কে একটি আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর, মানসম্মত ও সৃজনশীল শিক্ষাঙ্গনে পরিণত করা। তারা বিশ্বাস করেন, বিদ্যালয় কেবল জ্ঞানের কেন্দ্র নয়, বরং এটি একটি নৈতিকতা, দেশপ্রেম ও মানবিক মূল্যবোধ তৈরির কারখানা।
📖 উপসংহার
পশ্চিম ফুলমতি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদই হলো প্রতিষ্ঠানের প্রাণশক্তি। তাদের যোগ্য নেতৃত্ব, সততা, দায়িত্ববোধ এবং দূরদর্শিতার কারণেই বিদ্যালয় দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। পরিচালনা পর্ষদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে এই বিদ্যালয়কে শুধু ফুলবাড়ী থানা নয়, বরং জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।